রবিবার, ১০ অক্টোবর, ২০১০

ইউনিপে সম্পর্কে ১০-১০-১০ তিরিখের প্রথম আলো প্রতিবেদন

অতিমুনাফার লোভে চট্টগ্রামে মানুষ ইউনিপেটুইউর দিকে ছুটছে

বিনিয়োগ করা অর্থ মাত্র ১০ মাসে দ্বিগুণ করতে আলোচিত ইউনিপেটুইউ ১২০ শতাংশ সুদ দিচ্ছে গ্রাহকদের। আর বিশ্বের এই সর্বোচ্চ হারে সুদ পেয়ে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করতে সেখানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে চট্টগ্রামের লোকজন।
ইউনিপেটুইউতে বিনিয়োগকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আদালত থেকে স্থগিতাদেশ থাকায় আর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন অতিমুনাফা দেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। ‘মাল্টি লেভেলিং’ এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটির এজেন্টরাও বিনিয়োগকারীদের দায়িত্ব নিতে রাজি নন। তার পরও পুলিশ, ব্যাংকার, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে স্বল্প আয়ের লোকজনও ছুটছেন ইউনিপেটুইউতে স্বল্প সময়ে বেশি লাভের আশায়।
এর আগে অতিমুনাফার আশায় অর্থ বিনিয়োগ করে এখনো বিপাকে আছেন যুব কর্মসংস্থান সোসাইটি (যুবক) ও আইটিসিএলের গ্রাহকেরা। কয়েক শ কোটি টাকা আটকে আছে সেখানে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ম মাহফুজুর রহমান টেলিফোনে বলেন, ‘যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকেই মানুষের সাবধান থাকা উচিত। আমরা ইউনিপেটুইউতে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ মনে করে তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছিলাম। পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশে তারা হিসাবগুলো চালু করার অনুমতি পেয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ইউনিপেটুইউ উচ্চহারে মুনাফা দিচ্ছে। আমরা বিজ্ঞাপন-নোটিশ ইত্যাদির মাধ্যমে জনগণকে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকে সতর্ক করেছিলাম। আর যেকোনো বিনিয়োগই বিনিয়োগকারী নিজ দায়িত্বে করবেন।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন নগরের জিইসি মোড়ের কার্যালয়ে ভিড় করছেন গ্রাহকেরা। এই কার্যালয় ছাড়াও নগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে ইউনিপেটুইউ এজেন্ট নিয়োগ করেছে। এ পর্যন্ত চট্টগ্রামে কতজন গ্রাহক রয়েছে, তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। গ্রাহকেরাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজেন্ট হিসেবে নতুন বিনিয়োগকারী নিয়ে আসছেন। এ জন্য তাঁরা কমিশনও পেয়ে থাকেন।
গত রোববার দুপুরে কার্যালয়ে গ্রাহক সেজে গেলে মো. তারেক নামে এক এজেন্ট বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে। ২১ হাজার থেকে শুরু করে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে। ১০ মাসে দ্বিগুণ হবে বিনিয়োগ।’
এসব টাকার নিরাপত্তা কী—এমন প্রশ্নে মো. তারেক বলেন, ‘একটু ঝুঁকি তো থাকবেই। লাভ যেমন বেশি, তেমন ঝুঁকিও থাকবে। কোনো সমস্যা হলে আপনার যে রকম হবে, হাজার হাজার মানুষেরও তেমন হবে।’ এখানে একাধিক পুলিশ সদস্যকেও বিনিয়োগকারী হিসেবে পাওয়া যায়। ইউনিপেটুইউর এই কার্যালয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বিভিন্ন চাকরিজীবী ও পেশাজীবী ভিড় করেন। সীতাকুণ্ড, পটিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় এর গ্রাহক ও এজেন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিক পরিচয় পেলে তাঁরা কথা বলেন না।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম টেলিফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউনিপেটুইউর ১১০টি হিসাব বন্ধ করেছিলাম। পরে আদালতের আদেশে তা খুলে দেওয়া হয়। তাদের পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। আশা করি, এ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া যাবে।’
তৌফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ইউনিপের গ্রাহকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাদের ব্যাংক হিসাবের সংখ্যাও বাড়ছে। মানুষ অতিমুনাফার আশায় এখানে বিনিয়োগ করছে। একজন টাকা জমা দিচ্ছে, সেই টাকা আরেকজনকে মুনাফা হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে একসময় যদি বিপর্যয় নেমে আসে, তাহলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।’
এদিকে, ইউনিপেটুইউ সম্প্রতি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৩ মে তাদের নয়টি ও গ্রাহকদের ১১০টি হিসাব বন্ধ করে দিলেও ১৩ জুন ব্যবসা পরিচালনার স্বার্থে একটি হিসাব খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনে হস্তান্তর করে। দুদক ৬ জুলাই একটি হিসাব বাদে বাকিগুলো আদালতে আবেদনের মাধ্যমে জব্দ করে। পরে ২৬ জুলাই হাইকোর্টের আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশ দিলে সেগুলো আবার চালু করার অনুমতি পায় ইউনিপেটুইউ। 

রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১০

ইউনিপে টু ইউ -তে কাজ করতে আসার আগে আপনাকে যে সব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

এত কষ্টের বিনিময়ে অর্জিত আপনার অর্থের সঠিক সংরক্ষন করুন। লোভে বা ফাঁদে পা দিবেন না। অতিরিক্ত লাভের আশায় মূলধন হারানোর অনেক নজির আমাদের দেশে আছে।  অতএব সাবধান!!!!! কাউকে বিশ্বাস করবেন না। নিজের উপর আস্তা রাখুন এবং নিরাপদ থাকুন। সৃষ্টিকর্তা সকলকে সুন্দর ও নিরাপদে রাখুক।